Post Page After Menubar Ad

OrdinaryITPostAd

ওজু করার নিয়ম।ওজুর দোয়া। ওজু ভঙ্গের কারন। ওজুর ফরজ লিখ। বাথরুমে ওজু করার সময় বিসমিল্লাহ বলা যাবে কি?

ওজু করার নিয়ম।ওজুর দোয়া। ওজু ভঙ্গের কারন। ওজুর ফরজ লিখ।

বাথরুমে ওজু করার সময় বিসমিল্লাহ বলা যাবে কি?

ওজু করার নিয়ম, ওজুর দোয়া, ওজু ভঙ্গের কারণ, ওজুর ফরজ ও বাথরুমে ওজু করার সময় বিসমিল্লাহ বলা যাবে কি – সবকিছু বিস্তারিত জানুন এক পোস্টে।


ইসলাম ধর্মে নামাজ হচ্ছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আর নামাজের জন্য শর্ত হলো পবিত্রতা অর্জন। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে বলেছেন –
"হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নামাজের জন্য দাঁড়াও, তখন তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করো এবং মাথার মাসেহ করো এবং টাখনু পর্যন্ত পা ধৌত করো।" (সূরা মায়িদা: আয়াত ৬)

এই আয়াত থেকেই বোঝা যায়, ওজু নামাজের একটি অপরিহার্য অংশ। সঠিকভাবে ওজু করা মানে নামাজের জন্য শরীর ও আত্মাকে প্রস্তুত করা। এখন আমরা ধাপে ধাপে দেখব – ওজু করার নিয়ম। ওজুর দোয়া। ওজু ভঙ্গের কারন। ওজুর ফরজ লিখ। বাথরুমে ওজু করার সময় বিসমিল্লাহ বলা যাবে কি?


১. ওজু করার নিয়ম

ওজু করার নিয়ম ইসলামে খুবই পরিষ্কারভাবে বর্ণিত আছে। ধাপে ধাপে সঠিক নিয়ম নিচে দেওয়া হলো –

ধাপ ১: নিয়ত করা

প্রথমে অন্তরে নিয়ত করতে হবে যে আমি নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ওজু করছি।

ধাপ ২: বিসমিল্লাহ পড়া

ওজু শুরু করার আগে "বিসমিল্লাহ" বলা সুন্নত। তবে বাথরুমে ওজু করলে আলেমগণ বলেছেন, অন্তরে পড়া উত্তম।

ধাপ ৩: হাত ধোয়া

দুই হাত কবজি পর্যন্ত ভালোভাবে তিনবার ধোয়া।

ধাপ ৪: কুলকুচি করা

মুখে পানি নিয়ে কুলি করা। দাঁত ও মুখের ভেতরের অংশ পরিষ্কার করা।

ধাপ ৫: নাক পরিষ্কার করা

ডান হাতে পানি নিয়ে নাকে টেনে নেওয়া এবং বাঁ হাতে নাক ঝাড়া।

ধাপ ৬: মুখ ধোয়া

কপাল থেকে চিবুক পর্যন্ত এবং কানের পাশ পর্যন্ত মুখ ধোয়া।

ধাপ ৭: হাত ধোয়া

প্রথমে ডান হাত এবং তারপর বাঁ হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধোয়া।

ধাপ ৮: মাথার মাসেহ

ভেজা হাত দিয়ে মাথার সামনের দিক থেকে পেছন পর্যন্ত মাসেহ করা।

ধাপ ৯: কান মাসেহ

ভেজা হাতের আঙ্গুল দিয়ে কান পরিষ্কার করা।

ধাপ ১০: পা ধোয়া

ডান পা ও বাঁ পা টাখনু পর্যন্ত তিনবার ধোয়া। আঙ্গুলের ফাঁক পরিষ্কার করা।

➡️ এভাবেই সম্পূর্ণ ওজু শেষ হয়।


২. ওজুর দোয়া

ওজু করার সময় ও পরে কিছু দোয়া পড়া সুন্নত।

  • ওজুর শুরুতে:
    "বিসমিল্লাহ"

  • ওজু শেষ হওয়ার পরে:
    اللّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ، وَاجْعَلْنِي مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ
    উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাজআলনী মিনাত্তাওয়াবীনা ওয়াজআলনী মিনালমুতাতাহ্‌হিরীন।
    অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন।

➡️ এ দোয়া পড়লে ওজু আরও পূর্ণতা পায় এবং সওয়াব বৃদ্ধি হয়।

৩. ওজু ভঙ্গের কারণ

কোন কাজগুলো করলে ওজু ভেঙে যায় তা জানা জরুরি। প্রধান কারণগুলো হলো –

  1. পেশাব-পায়খানা বা বাতকর্ম করা

  2. গভীর ঘুম (যখন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ন্ত্রণ থাকে না)

  3. মাতলামি বা জ্ঞান হারানো

  4. বমি (অধিক পরিমাণ)

  5. রক্ত বা পুঁজ প্রবাহিত হওয়া

  6. স্ত্রী সহবাস বা উত্তেজনায় বীর্যপাত

➡️ এসব কারণে ওজু ভেঙে গেলে পুনরায় ওজু করতে হয়।


৪. ওজুর ফরজ লিখ

ওজুর মোট ৪টি ফরজ রয়েছে। এগুলো না করলে ওজু হবে না।

  1. মুখমণ্ডল ধোয়া

  2. হাত কনুই পর্যন্ত ধোয়া

  3. মাথার মাসেহ করা

  4. পা টাখনু পর্যন্ত ধোয়া

➡️ এগুলো কুরআনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে।

                              আরো পড়ুন

৫. বাথরুমে ওজু করার সময় বিসমিল্লাহ বলা যাবে কি?

অনেকেই প্রশ্ন করেন, “বাথরুমে ওজু করার সময় বিসমিল্লাহ বলা যাবে কি?”

  • আলেমদের মতে, যদি বাথরুমে টয়লেট ও ওজুর স্থান একসাথে থাকে, তবে জোরে জোরে বিসমিল্লাহ পড়া উচিত নয়।

  • এর পরিবর্তে অন্তরে মনে মনে পড়া যেতে পারে।

  • তবে যদি আলাদা স্থানে ওজুর জায়গা থাকে, তাহলে মুখে উচ্চারণ করাই উত্তম।

➡️ তাই পরিস্থিতি অনুযায়ী বিসমিল্লাহ পড়তে হবে।


ওজুর গুরুত্ব

  • ওজু মুসলমানের জন্য শুধু শরীর পরিষ্কার নয়, বরং আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার একটি উপায়।

  • হাদিসে এসেছে: "যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওজু করে এবং দুই রাকাত নামাজ পড়ে, তার পূর্বের ছোটখাটো গুনাহ মাফ হয়ে যায়।" (সহিহ মুসলিম)

প্রশ্নোত্তর 

প্রশ্ন ১: ওজু করার সময় কি ভুল হলে ওজু হবে?
উত্তর: যদি ফরজ অংশগুলো সঠিকভাবে না করা হয়, তবে ওজু হবে না। সুন্নত অংশ বাদ গেলে ওজু হবে, কিন্তু পূর্ণ সওয়াব কমে যাবে।

প্রশ্ন ২: ঘামে ভিজে গেলে কি ওজু ভেঙে যায়?
উত্তর: না, ঘামে ভিজলে ওজু ভাঙে না।

প্রশ্ন ৩: অজান্তে বাতকর্ম হলে কি আবার ওজু করতে হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, বাতকর্ম ওজু ভঙ্গ করে।

প্রশ্ন ৪: কি কি কারণে বারবার ওজু করা উচিত?
উত্তর: প্রতিটি নামাজের আগে, কুরআন তিলাওয়াতের আগে, মসজিদে যাওয়ার আগে ও প্রতিটি ইবাদতের জন্য ওজু করা উত্তম।

প্রশ্ন ৫: ঘুমের সময় ওজু ভাঙে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, গভীর ঘুমে ওজু ভেঙে যায়। তবে হালকা ঘুমে (যেখানে শরীর নিয়ন্ত্রণে থাকে) ওজু ভাঙে না।

উপসংহার

ওজু হলো নামাজের প্রথম ধাপ এবং মুসলিম জীবনের অন্যতম প্রধান আমল। তাই আমাদের সবার উচিত সঠিকভাবে ওজু করার নিয়ম জানা, ওজুর দোয়া মুখস্থ করা, ওজু ভঙ্গের কারণ সম্পর্কে সচেতন থাকা, ওজুর ফরজ মনে রাখা এবং প্রয়োজনে বাথরুমে ওজু করার সময় বিসমিল্লাহ বলা যাবে কি – এই বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া।

➡️ সঠিক ওজু ছাড়া নামাজ কবুল হয় না। তাই মুসলমানদের সর্বদা ওজু সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন
comment url

Post Page Ad Right After Title

Advertisement

Advertisement

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪