Post Page After Menubar Ad

OrdinaryITPostAd

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষন। ডেঙ্গু হলে করনীয় কি? ডেঙ্গু প্রতিরোধে করনীয়।

 ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষন



আরো পড়ুন

ডেঙ্গু জ্বর একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। ডেঙ্গুর কিছু সাধারণ এবং গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ নিচে দেওয়া হলো:

ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান লক্ষণসমূহ:

  1. উচ্চ জ্বর

    • হঠাৎ করে ১০২–১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বর।

  2. মাথাব্যথা

    • বিশেষ করে চোখের পেছনে তীব্র মাথাব্যথা।

  3. চোখের পেছনে ব্যথা

    • চোখ নাড়ালে বা আলোতে তাকালে ব্যথা অনুভূত হয়।

  4. মাংসপেশি ও জয়েন্টে ব্যথা

    • শরীর ও হাড়ে ভেঙে পড়ার মতো অনুভূতি — এজন্য একে "ব্রেকবোন ফিভার"ও বলা হয়।

  5. বমি ভাব বা বমি

    • অনেক রোগীর খাবারে অরুচি ও বমি হতে পারে।

  6. চামড়ার র‍্যাশ / ফুসকুড়ি

    • জ্বরের ৩–৪ দিন পর শরীরে ফুসকুড়ি বা লালচে র‍্যাশ দেখা দিতে পারে।

  7. রক্তপাত (গম্ভীর ক্ষেত্রে)

    • নাক বা মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, চামড়ার নিচে দাগ বা রক্তক্ষরণ হতে পারে (ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার হলে)।

  8. প্লেটলেট সংখ্যা কমে যাওয়া

    • রক্ত পরীক্ষা করলে প্লেটলেট (Platelet) ও সাদা রক্তকণিকার সংখ্যা কমে যায়।



গুরুতর লক্ষণ (Severe Dengue):

  • অবচেতন বা অজ্ঞান হওয়া

  • শ্বাসকষ্ট

  • রক্তচাপ কমে যাওয়া (শক)

  • ঘনঘন বমি

  • পেট বা লিভারে ব্যথা

  • রক্ত বমি বা কালো পায়খানা


কি করণীয়:

  • প্রচুর পানি ও তরল খেতে হবে

  • জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে (অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন খাওয়া বারণ)

  • বিশ্রাম ও পর্যবেক্ষণ জরুরি

  • গুরুতর লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে


ডেঙ্গু হলে করনীয় কি?





ডেঙ্গু হলে করণীয় বিষয়গুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নিলে জটিলতা অনেকটাই এড়ানো যায়। নিচে ধাপে ধাপে ডেঙ্গু হলে কী করা উচিত তা বলা হলো:

ডেঙ্গু হলে করণীয় (যত্ন ও চিকিৎসা):

ডাক্তারের পরামর্শ নিন

  • ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

  • প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে (CBC, Platelet count, Dengue NS1, IgM/IgG ইত্যাদি)।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন

  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ করার জন্য বিশ্রাম অত্যন্ত জরুরি।

প্রচুর পানি ও তরল পান করুন

  • শরীর থেকে পানিশূন্যতা ঠেকাতে দিনে অন্তত ২.৫–৩ লিটার পানি খান।

  • স্যালাইন, ডাবের পানি, স্যুপ, ফলের রস (চিনি ছাড়া) খাওয়া যেতে পারে।

জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল ব্যবহার করুন

  • জ্বর বা ব্যথা হলে প্যারাসিটামল (Paracetamol) খেতে পারেন।

  • এ্যাসপিরিন (Aspirin), আইবুপ্রোফেন (Ibuprofen) বা অন্য ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া বিপজ্জনক — এগুলো রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।


প্লেটলেট কাউন্ট পর্যবেক্ষণ করুন

  • ডেঙ্গুতে প্লেটলেট কমে যেতে পারে। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়মিত এটি দেখা দরকার।

  • সাধারণত প্লেটলেট ৫০,০০০-এর নিচে নামলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া দরকার হতে পারে।


গুরুতর উপসর্গ দেখা দিলে হাসপাতালে যান:

  • বারবার বমি হওয়া

  • পেট ব্যথা বা লিভারে ব্যথা

  • রক্ত বমি বা কালো পায়খানা

  • অত্যন্ত দুর্বলতা বা মাথা ঘোরা

  • শ্বাসকষ্ট

  • জ্ঞান হারানো

যা করা উচিত নয়:

  • ঘরোয়া ভুল চিকিৎসা করা

  • নিজে নিজে এন্টিবায়োটিক খাওয়া (ডেঙ্গুতে এগুলো কাজ করে না)

  • রক্তপাত উপেক্ষা করা

  • শরীর শুকিয়ে গেলে পানিশূন্য অবস্থায় থাকা


সংক্ষেপে মনে রাখুন:
জ্বর + চোখ বা শরীর ব্যথা + র‍্যাশ = ডেঙ্গু সন্দেহডাক্তার দেখান + পানি পান করুন + প্যারাসিটামল নিন + বিশ্রাম করুন।



ডেঙ্গু প্রতিরোধে করনীয়

ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা এডিস মশা (Aedes aegypti) দ্বারা ছড়ায়। এই মশা সাধারণত দিনে কামড়ায়, বিশেষ করে সকাল ও বিকেলে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মূল কাজ হলো মশার বিস্তার রোধ করা ও নিজেকে মশার কামড় থেকে বাঁচানো



                                                                    আরো পড়ুন


নিচে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়গুলো সহজভাবে তুলে ধরা হলো:


ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় (What To Do)

১. 🧼 জমে থাকা পানি পরিষ্কার করুন

  • ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, খোলা ড্রাম, প্লাস্টিক বোতল, এসির নিচে জমে থাকা পানি — সপ্তাহে অন্তত ১–২ বার ফেলে দিন বা ঢেকে রাখুন।

  • এডিস মশা পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে।


মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করুন

  • দিনে ঘুমালে মশারি ব্যবহার করুন।

  • পুরো হাত-পা ঢাকা হালকা রঙের পোশাক পরুন।

  • মশা তাড়ানোর ক্রিম, স্প্রে বা কয়েল ব্যবহার করুন।



বাসা-বাড়িতে মশা ঢোকা বন্ধ করুন

  • দরজা-জানালায় জাল লাগান।

  • জানালার পর্দা দিয়ে ঘর ঢেকে রাখুন।

  • সন্ধ্যা বা সকালে দরজা-জানালা বন্ধ রাখার চেষ্টা করুন।


পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন

  • নালা বা ড্রেন বন্ধ হয়ে গেলে পরিষ্কার করুন।

  • ঝোপঝাড়, গাছপালা নিয়মিত ছেঁটে দিন।

  • খালি ক্যান, বোতল, নারকেলের খোসা, নারিকেল গাছের গোঁড়ায় জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলুন।

সচেতনতা ও প্রতিবেশী সহায়তা

  • নিজের বাসা যেমন পরিষ্কার রাখবেন, আশেপাশের এলাকাও তদারকি করুন।

  • স্কুল, অফিস বা মসজিদেও সচেতনতা প্রচার করুন।

যা করবেন না (What Not to Do):

  • পরিষ্কার পানি জমে থাকতে দেওয়া ❌

  • দিনের বেলায় মশা নিয়ে অসচেতন থাকা ❌

  • অপ্রয়োজনীয় টব, টায়ার, ড্রাম খোলা রাখা ❌

স্লোগান মনে রাখুন:
“৩ দিনের বেশি পানি জমতে দেব না – ডেঙ্গুকে থামাবো আমরা।”



ডেঙ্গু রোগের প্রতিরোধ


ডেঙ্গু রোগের এখনো কোনো নির্দিষ্ট প্রতিকার (Specific Cure) বা প্রতিষেধক নেই, তবে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা ও যত্ন নিলে বেশিরভাগ রোগী সুস্থ হয়ে যান।

নিচে ডেঙ্গু রোগের প্রতিকার সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো:


ডেঙ্গু রোগের প্রতিকার / চিকিৎসা ব্যবস্থা

❌ ❗ ডেঙ্গুর নির্দিষ্ট কোনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই

ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ, এজন্য অ্যান্টিবায়োটিক (ব্যাকটেরিয়ার জন্য ব্যবহৃত) কাজ করে না। তবে লক্ষণ উপশম ও জটিলতা প্রতিরোধের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয় — একে বলে সাপোর্টিভ কেয়ার (Supportive Care)


জ্বর ও ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল

  • জ্বর বা মাথা/শরীর ব্যথার জন্য শুধুমাত্র প্যারাসিটামল ব্যবহার করতে বলা হয়।

  • এ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন ইত্যাদি খাওয়া নিষেধ — এগুলো রক্তপাত বাড়িয়ে দিতে পারে।


পানি ও তরল খাওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ

  • ডেঙ্গুতে শরীরে পানিশূন্যতা হয় এবং শক (shock) হতে পারে।

  • প্রচুর পানি, ওআরএস, ডাবের পানি, লেবু পানি, স্যুপ ইত্যাদি খেতে হয়।

  • শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে পানিশূন্যতা আরও বিপজ্জনক হতে পারে।


পর্যাপ্ত বিশ্রাম

  • শরীর দুর্বল হয়ে যায়, তাই পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম জরুরি।


নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ

  • প্লেটলেট কাউন্ট ও হেমাটোক্রিট নিয়মিত চেক করতে হয়।

  • প্লেটলেট সংখ্যা খুব কমে গেলে (৫০,০০০-এর নিচে) হাসপাতালে ভর্তি হতে হতে পারে।


গুরুতর ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি জরুরি

গুরুতর ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে (Severe Dengue বা Dengue Hemorrhagic Fever) রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে নিচের বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হয়:

  • স্যালাইন দিয়ে হাইড্রেশন বজায় রাখা

  • রক্তপাত হলে চিকিৎসা

  • শক হলে জরুরি চিকিৎসা

  • অক্সিজেন থেরাপি (প্রয়োজনে)

সতর্কতা:

  • ডেঙ্গু নিজে নিজে ভাল হয়ে গেলেও গুরুতর জটিলতা হঠাৎ করে দেখা দিতে পারে, তাই লক্ষণ উপেক্ষা করা যাবে না।

  • সময়মতো চিকিৎসা নিলে মৃত্যুর হার খুবই কম।


সংক্ষেপে মনে রাখুন:

🔹 নির্দিষ্ট ওষুধ নেই
🔹 প্যারাসিটামল + পানি + বিশ্রাম
🔹 রক্ত পরীক্ষা + সতর্ক নজরদারি
🔹 গুরুতর হলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি







এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন
comment url

Post Page Ad Right After Title

Advertisement

Advertisement

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪